ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী কর্তৃক বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা বিজয়ের পর কোম্পানী ধীরে ধীরে তাদের শাসন ব্যবস্থা সুদৃঢ় করতে থাকে। রাজস্ব আদায় ও ব্যবসা-বাণিজ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ব্রিটিস বেনিয়ারা সারা ভারতবর্ষে প্রভূত্ব ও রাজত্ব কায়েমের জন্য তৎপর হয়ে উঠে সুতরাং বণিকের ‘মানদন্ড দেখা দেয়া রাজদন্ড’ রূপে। শাসন ব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থায় নানা পরিবর্তন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বাঙলার গভর্ণর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ১৮২৯ সালে কয়েকটি জেলা নিয়ে একটি করে বিভাগের সৃষ্টি করেন। প্রতিটি বিভাগের শাসন ও বিচার কার্য পরিচালনার জন্য একজন কমিশনার নিয়োগ করেন। ১৮২৯ সালে খুলনা বিভাগ দূরে থাক কোন থানার অস্তিত্বও ছিল না। এসময় খুলনা ও বাগেরহাট অঞ্চল যশোর জেলার অন্তর্গত ছিল।
১৮৪২ সালে বেঙ্গলের প্রেসিডেন্সি বিভাগের প্রথম মহকুমা খুলনায় স্থাপিত হয়। পূর্বে খুলনা এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় লোকবসতি অনেক কম ছিল। মহকুমা স্থাপনের পর কোর্ট কাছারি চালু হয়। লোক সমাগম বৃদ্ধি পেতে থাকে। ভৈরব নদীকে কেন্দ্র করে ব্যবসা - বাণিজ্যের প্রসার লাভ করায় শহরের সম্প্রসারণ ঘটে। ইতোমধ্যে ১৯৬৩ সালে বাগেরহাট মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। যশোর জেলা কালেক্টর ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষে বিশাল যশোর জেলার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অবশেষে ১৮৮২ সালের ২৫ এপ্রিল যশোর জেলা হতে খুলনা ও বাগেরহাট এবং ২৪ পরগণার সাতক্ষীরা মহকুমা নিয়ে খুলনা জেলার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
দীর্ঘ দিনের আন্দোলন ও সংগ্রাম শেষে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
১৯৬০ সালে রাজশাহী বিভাগের খুলনা, কুষ্টিয়া, যশোর এবং ঢাকা বিভাগের বরিশাল জেলা কর্তন করে খুলনা বিভাগ গঠন করা হয়। ১৯৬০ সালের ০১ অক্টোবর প্রথম বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে জনাব এম মঞ্জুর-ই-ইলাহি যোগদান করেন। যতদূর জানা যায় বয়রায় বিভাগীয় কমিশনারের সেক্রেটারিয়েট স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত খুলনা সার্কিট হাউজের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত খুলনা পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কুমুদ রঞ্জন ঘোষের বাড়িতে বিভাগীয় অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ১৯৮৪ সালে খুলনা বিভাগের জেলার সংখ্যা ছিল ১৬টি। পরবর্তীতে খুলনা বিভাগ হতে ৬টি জেলা যথাক্রমে বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি ও বরগুনা কর্তন করে বরিশাল বিভাগ গঠিত হওয়ায় বর্তমানে খুলনা বিভাগের জেলার সংখ্যা ১০ টি।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস