খুলনা বিভাগ বাংলাদেশের আটটি বিভাগের মধ্যে একটি এবং এটি দেশের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অবস্থিত। ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুয়ায়ী, বিভাগটির আয়তন ২২,২৮৫ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ১৫,৫৬৩,০০০ জন। খুলনা বিভাগের সদর দপ্তর খুলনা শহর। ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পরে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। খুলনা বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে রূপসা নদী এবং ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত। বাংলাদেশের প্রাচীনতম নদী বন্দরগুলোর মধ্যে খুলনা অন্যতম। খুলনা বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় খুলনা শহরকে শিল্প নগরী হিসেবে ডাকা হয়। খুলনা শহর থেকে ৪৮ কি.মি. দূরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলা সমুদ্র বন্দর অবস্থিত। পৃথিবী বিখ্যাত উপকূলীয় বন সুন্দরবন খুলনা বিভাগের দক্ষিণাংশে অবস্থিত। খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় সুন্দরবনের বিস্তৃতি ঘটেছে। খুলনাকে সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার বলা হয়।[রাজধানী ঢাকা থেকে খুলনা শহরের দূরত্ব সড়কপথে ৩৩৩কি.মি.। রাজধানী সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সংগে স্থলপথ, আকাশপথ, জলপথ ব্যবহার করা যায়। ১৯১২ সালে থেকে অত্র অঞ্চলে নদীপথে স্টিমার (স্টিমবোট) চলাচল করে।
খুলনা বিভাগ এর পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমানা, উত্তরে রাজশাহী বিভাগ, পূর্বে ঢাকা বিভাগ ও বরিশাল বিভাগ এবং দক্ষিণে বিখ্যাত ম্যানগ্রোভ বন নামে পরিচিত সুন্দরবন সহ বঙ্গোপসাগরের উপর তটরেখা রয়েছে। এটি গঙ্গা নদীর দ্বীপ বা গ্রেটার বেঙ্গল ডেল্টার একটি অংশবিশেষ। অন্যান্য নদীর মধ্যে রয়েছে মধুমতি নদী, ভৈরব নদী ও কপোতাক্ষ নদী। এছাড়াও অঞ্চলের বঙ্গোপসাগরের কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে। পৃথিবীর মানচিত্রে খুলনা বিভাগের অবস্থান ২১০৪০' উত্তর অক্ষাংশ হতে ২৪০১২ উত্তর অংশে এবং ৮৮০৩৪' পূর্ব দ্রাঘিমা হতে ৮৯০৫৭' পূর্ব দ্রাঘিমায়।
খুলনা বিভাগ ৫৯টি উপ-জেলা (উপজেলা) উপবিভাজন নিম্নলিখিত ১০টি জেলা (জিলা) নিয়ে গঠিত হয়েছে
জেলা | প্রশাসনিক কেন্দ্র | এলাকা কিমিবর্গ. | জনসংখ্যা ১৯৯১ আদমশুমারী | জনসংখ্যা ২০০১ আদমশুমারী | জনসংখ্যা ২০১১ আদমশুমারী < |
---|---|---|---|---|---|
কুষ্টিয়া জেলা | কুষ্টিয়া জেলা | ১,৬০৮.৮০ | ১,২০২,১২৬ | ১,৭৪০,১৫৫ | ১,৯৪৬,৮৩৮ |
খুলনা জেলা | খুলনা | ৪,৩৯৪.৪৫ | ২,০১০,৬৪৩ | ২,৩৭৮,৯৭১ | ২,৩১৮,৫২৭ |
চুয়াডাঙ্গা জেলা | চুয়াডাঙ্গা জেলা | ১,১৭৪.১০ | ৮০৭,১৬৪ | ১,০০৭,১৩০ | ১,১২৯,০১৫ |
ঝিনাইদহ জেলা | ঝিনাইদহ জেলা | ১,৯৬৪.৭৭ | ১,৩৬১,২৮০ | ১,৫৭৯,৪৯০ | ১,৭৭১,৩০৪ |
নড়াইল জেলা | নড়াইল | ৯৬৭.৯৯ | ৬৫৫,৭২০ | ৬৯৮,৪৪৭ | ৭২১,৬৬৮ |
বাগেরহাট জেলা | বাগেরহাট | ৩,৯৫৯.১১ | ১,৪৩১,৩২২ | ১,৫৪৯,০৩১ | ১,৪৭৬,০৯০ |
মাগুরা জেলা | মাগুরা জেলা | ১,০৩৯.১০ | ৭২৪,০২৭ | ৮২৪,৩১১ | ৯১৮,৪১৯ |
মেহেরপুর জেলা | মেহেরপুর জেলা | ৭৫১.৬২ | ৪৯১,৯১৭ | ৫৯১,৪৩০ | ৬৫৫,৩৯২ |
যশোর জেলা | যশোর জেলা | ২,৬০৬.৯৪ | ২,১০৬,৯৯৬ | ২,৪৭১,৫৫৪ | ২,৭৬৪,৫৪৭ |
সাতক্ষীরা জেলা | সাতক্ষীরা জেলা | ৩,৮১৭.২৯ | ১,৫৯৭,১৭৮ | ১,৮৬৪,৭০৪ | ১,৯৮৫,৯৫৯ |
মোট | ১০ | ২২,২৮৪.২২ | ১২,৬৮৮,৩৮৩২ | ১৪,৭০৫,২২৩ | ১৫,৬৮৭,৭৫৯ |
বিভাগ সহ উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ
একসময় খুলনা শিল্পশহর হিসাবে বিখ্যাত হলেও বর্তমানে এখানকার বেশিরভাগ শিল্পই রুগ্ন। পূর্বে খুলনাতে দেশের একমাত্র নিউজপ্রিন্ট ও হার্ডবোর্ড মিল ছিল যা এখন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। খুলনার বেশির ভাগ পাটকলগুলোও একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে খুলনার উল্লেখযোগ্য শিল্প হল বেসরকারী উদ্যোগে গড়ে ওঠা রপ্তানীযোগ্য মাছ শিল্প। খুলনাকে এক সময় বলা হত রুপালি শহর। এর কারন এই এলাকাতে প্রচুর পরিমাণ চিংড়ী উৎপাদন করা হত। এখনও হয়, যদিও কিছুটা কমে গেছে। আপনি খুলনার দৌলতপুরের মহসিন মোড় থেকে যতই পথ অতিক্রম করতে থাকবেন ততই দেখতে থাকবেন রাস্তার দূ ধার দিয়ে শুধু বিল আর মাছের ঘের। এখানকার উল্লেখযোগ্য মাছ চাষকারী প্রতিষ্ঠান হলো জনতা সমবায় সমিতি লিঃ। এসব ঘেরে সাদা মাছের সাথে চাষ হয় প্রচুর চিংড়ী। এবং খুলনার পাইকগাছা , দাকোপ , কয়রা উপজেলাতে লোনা পানি ঘের দেখা যায় সেখানে প্রচুর পরিমানে বাগদা চিংড়ি হয়।
খুলনার জনপ্রিয় খাবার নারিকেলের।। এখাকার জলবায়ু নারিকেল গাছ হওয়ার জন্য অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। খুলনা গলদা চিংড়ির জন্য অনেক প্রসিদ্ধ। আরও রয়েছে খুলনার রয়েল হোটেলের ফালুদা।
খুলনার রাস্তাঘাট মোটামুটি ভাল এবং অনেক প্রশস্ত। এই শহরটি যানজট এর হাতে এখনও পড়েনি। তবে খুলনা থেকে যশোর যেতে আপনাকে একটু সমস্যা পোহাতে হতে পারে। এদিকের রাস্তাঘাট অনেক বেশিই খারাপ। শিল্প কল কারখানা গুলো ফুলতলায় গড়ে ওঠায় এই রাস্তাটি বেশ ভাঙাচোরা।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস